ব্লগ

ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা, সঠিক নিয়ম-কানুন এবং ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতির সাথে সাথে বিভিন্ন পবিত্র স্থানের ইতিহাস ও দর্শনীয় স্থানসমূহের বিস্তারিত বর্ণনা থাকবে এখানে।

Blog Details
বাংলাদেশি মুসলমানদের জন্য হজ্জের আবেদন প্রক্রিয়া: এক নজরে সব তথ্য

 হজ হল ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ ফরজ ইবাদত, যেখানে সামর্থ্যবান মুসলমানরা হিজরি বছরের জ্বিলহজ্জ মাসে কাবা শরিফসহ মক্কার নির্দিষ্ট স্থানে গিয়ে নির্ধারিত নিয়মে ইবাদত করে।হজের প্রথম ও প্রধান শর্ত দৈহিক ও আর্থিকভাবে সামর্থ্যবান হওয়া।সামর্থবান বলতে দৈনন্দিন খরচ বাদে হজ্বে আবশ্যকীয় প্রয়োজনে যে পরিমাণ টাকা প্রয়োজন তথা যাওয়া আসা, সেখানে থাকা খাওয়া ইত্যাদি পরিমাণ টাকা থাকলে ব্যক্তির উপর হজ্ব করা ফরজ হয়ে থাকে।


সে হিসেবে দেখতে হবে বর্তমানে হজ্ব করতে গেলে কত টাকা লাগবে। সে টাকা উক্ত ব্যক্তির কাছে থাকলে তার উপর হজ্ব করা আবশ্যক।অনেকের জীবনে হজ্জ একমাত্র স্বপ্নের মতো। চলুন জেনে নেয়া যাক হজ্জ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এই একটি লেখায়।


হজের আবেদন প্রক্রিয়া: এক নজরে

হজ্জে যাওয়ার নিয়ত করে ফেললে সেক্ষেত্রে প্রথম কাজ হবে আবেদন করে ফেলা ।যদি সঠিক সময়ে আবেদন না করা হয় তাহলে শত ইচ্ছা থাকা সত্বেও সঠিক সময় হজ্জে যাওা সম্ভব হবে না। বাংলাদেশে হজ্জে যাওয়ার আবেদন সাধারণত প্রতি বছর জানুয়ারি থেকে মার্চ মাসের মধ্যে করা যায়। তবে আরবি মাস অনুযায়ি সময়টা পরিবর্তনশীল, তাই সরকারের ইসলামিক ফাউন্ডেশন ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইট চোখে রাখতে হয়।


কে হজ আবেদন করতে পারবেন?

বাংলাদেশ থেকে হজে আবেদনের ক্ষেত্রে, আবেদনকারীকে  অবশ্যই বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে। এছাড়াও আরো কিছু উল্লেখিত নিয়মাবলী রয়েছে

  • আবেদনকারীকে অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে ।
  • হজের ক্ষেত্রে সৌদি সরকার সাধারণত ১২ বছরের কম শিশুদের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেয় না । এক্ষেত্রে আবেদনকারীর বয়স ১২ বছরের বেশি  হতে হবে ।
  • শারীরিক ও মানসিকভাবে সক্ষম হতে হবে ।
  • হজ আল্লাহ্‌ তায়ালা শুধু মাত্র ধনি/সামর্থ্যবান মানুষের উপর ফরজ করেছেন। তাই হজ করতে হলে ন্যূনতম হজ খরচ বহনের সামর্থ্য থাকতে হবে।
  • ইসলাম নারীর নিরাপত্তায় বিশ্বাসী, তাই নারীর ক্ষেত্রে মাহরাম থাকতে হবে (ব্যতিক্রম ছাড়) ।

উপরোক্ত শর্তগুলো পূরণ সাপেক্ষেই একজন মুসলিম হজ পালনের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তাই হজের ইচ্ছা থাকলে এসব শর্ত ভালোভাবে জেনে এবং মান্য করে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত।


আবেদন প্রক্রিয়া:

প্রাক নিবন্ধন করতে যে সকল তথ্য প্রয়োজন:

প্রাক-নিবন্ধনের জন্য ১৮ বছরের উর্ধ্বের হজযাত্রীর জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র / পাসপোর্ট, ১৮ বছরের নীচের বয়সীদের জন্মনিবন্ধন/পাসপোর্ট এবং বিদেশে বসবাসরত (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি) হজযাত্রীর জন্য জন্মনিবন্ধন/পাসপোর্ট, ওয়ার্ক পারমিট অথবা ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রয়োজন হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে এসব তথ্য অনুযায়ী প্রাক আবেদন করতে হবে।


সরকারি মাধ্যমে প্রাক নিবন্ধন / নিবন্ধনে সহায়তা কেন্দ্র:

সরকারি মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন করতে ইচ্ছুক ব্যক্তিদের প্রাক-নিবন্ধনের জন্য নির্ধারিত সেন্টার যথাঃ ডিসি অফিস, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্র ও পরিচালক, ঢাকা হজ অফিস। তবে, সরাসরি নিজেই সরকারি মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন / নিবন্ধন করা যায়


সরকারি ব্যবস্থায় হজ পালনের জন্য করনীয়:

বাংলাদেশি মুসলমানদের জন্য হজে অংশ নিতে হলে নির্দিষ্ট কিছু প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবেদন ও নিবন্ধন সম্পন্ন করতে হয়। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী অনলাইন হজ পোর্টাল এবং নির্ধারিত ব্যাংকের মাধ্যমে অর্থ জমা দিয়ে হজ নিবন্ধন করতে হয়।

নিচে ধাপে ধাপে পুরো প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলো:


  • শুরুতেই হজ পোর্টালে নিবন্ধন করতে হবে। সেজন্য নিচের দেয়া লিংক থেকে নিবন্ধনের আবেদনটি করতে হবে: www.hajj.gov.bd 
  • অনলাইনে আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় ফরম পূরণ করতে হবে ।ফরম পূরণের ক্ষেত্রে নির্ভুল তথ্য দিয়ে ফরম পূরণ কর‍তে হবে । অন্যথায় আবেদনটি বাতিল হয়ে যাবে।
  • আবেদন সম্পূর্ন হলে ভর্তি টাকা নির্ধারিত ব্যাংকে জমা দিতে হবে । (প্রথম কিস্তি/পুরো টাকা) 
  • পাসপোর্ট, ছবি ও প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হবে । লক্ষনীয় বিষয়সমুহ হলো  বৈধ মেশিন-রিডেবল (MRP) পাসপোর্ট যার মেয়াদ কমপক্ষে হজ শেষে দেশে ফেরার সময় পর্যন্ত থাকবে। পাসপোর্টটি মূল কপিসহ জমা দিতে হবে । সাম্প্রতিক তোলা ৪ কপি রঙিন ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে, নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী)। ছবি অবশ্যই হালনাগাদ এবং আবেদনকারীর বর্তমান চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। আবেদনকারীর পরিচয় নিশ্চিত করার জন্য এটি আবশ্যক। হজ এজেন্সি বা সরকারি পোর্টালের মাধ্যমে নির্ধারিত আবেদন ফরম যথাযথভাবে পূরণ করে জমা দিতে হবে। হজযাত্রীর নিজস্ব যোগাযোগের তথ্য, যাতে প্রয়োজনে যোগাযোগ করা যায়। 
  • সফল নিবন্ধনের পর হজ যাত্রী একটি হজ আইডি পাবেন । হজে অংশগ্রহণের জন্য নিবন্ধন প্রক্রিয়া শেষ হলে প্রতিটি আবেদনকারী একটি হজ আইডি (Hajj ID) পান। এই হজ আইডি হলো আবেদনকারীর হজ সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম, তথ্য ও সরকারি নথিপত্রের একটি একক পরিচিতি নম্বর। এটি মূলত ডিজিটাল হজ ব্যবস্থাপনার একটি অংশ, যা হজ যাত্রার প্রতিটি ধাপে অনলাইন ও অফলাইন ট্র্যাকিং সহজ করে।

ধাপসমূহ অনুসরণ করে সঠিকভাবে আবেদন সম্পন্ন করলেই হজের জন্য নিবন্ধন সম্পন্ন হবে। প্রতিটি ধাপ যথাযথভাবে সম্পন্ন করা হজযাত্রার প্রস্তুতির প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাই সময়মতো সব কাজ শেষ করা অত্যন্ত জরুরি


হজ কোটার ধরন (বাংলাদেশ প্রেক্ষাপট)

 বাংলাদেশের সহ প্রতিটা দেশের জন্য সৈদি সরকার হজের কোটা নির্ধারন করে দেইয়। এর কারন নিরাপদে এবং নিয়ন্ত্রিত ভাবে সহজে হজ পালন করা। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সরকারি এবং বেসরকারি দুই ভাবেই হজ করা যায়। 


সরকারি কোটা:

বাংলাদেশ সরকারের তত্ত্বাবধানে প্রতিবছর সুশৃঙ্খলভাবে হজ পরিচালিত হয়।  সঠিক সময় ও নিয়ম মেনে আবেদন করাই হজে অংশগ্রহণের প্রথম ও গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। প্রতি বছর বাংলাদেশ সরকার নির্ধারিত একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক হজযাত্রীকে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পাঠায়। আবেদনকারীরা www.hajj.gov.bd পোর্টালে আবেদন করেন।


সরকারি মাধ্যমে হজ আবেদন বাতিল হলে করণীয়:

আবেদন বাতিলের কারণ জেনে নেওয়া:

প্রথমেই জানা গুরুত্বপূর্ণ, কেন আবেদনটি বাতিল হয়েছে। সাধারণত বাতিলের কারণ হতে পারে:

  • অনুপূর্ণ বা ভুল তথ্য প্রদান করলে বাতিল হতে পারে আবেদন। 
  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে টাকা জমা না দিলে আবেদন বাতিল হবে ।
  • হজ যাত্রী যদি পরিপূর্ন সুস্থ না থাকেন অথবা স্বাস্থ্য রিপোর্টে কোনো সমস্যা ধরা পরে সেক্ষেত্রে হজের আবেদন বাতিল হতে পারে।
  • পাসপোর্ট সমস্যা বা মেয়াদোত্তীর্ণ পাসপোর্ট দিয়ে আবেদন করলেও আবেদনটি বাতিল হবে  
  • কোটার অতিরিক্ত আবেদন আবেদন করলে সেটি গ্রহনযোগ্য হবে না।

 

বাতিলের কারণ এসএমএস/ই-মেইল/অনলাইন হজ পোর্টালে জানানো হয়ে থাকে। বাতিলের বিষয়ে বিস্তারিত জানতে এবং পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সাহায্য পেতে স্থানীয় জেলা হজ অফিস, ধর্ম মন্ত্রণালয়, অথবা হজ হেল্পলাইন নম্বরে যোগাযোগ করুন।


যদি আবেদন বাতিল হয়, এবং আপনি টাকা জমা দিয়ে থাকেন, তাহলে আপনাকে রিফান্ডের জন্য আবেদন করতে হবে। নির্ধারিত রিফান্ড ফরম পূরণ করতে হবে। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট (পাসপোর্ট, ব্যাংকের রসিদ, আবেদন বাতিলের প্রমাণ ইত্যাদি) সংযুক্ত করতে হবে। সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে বা অনলাইনে রিফান্ড আবেদন জমা দিতে হবে ।

 

সাধারণত আবেদন যাচাইয়ের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা ফেরত দেওয়া হয়।

 

পরবর্তী বছরে আবেদন করার প্রস্তুতি নেওয়া:

যদি এবার যাওয়া না হয়, তবে আগামী বছর সঠিকভাবে প্রস্তুতি নিয়ে সময়মতো আবেদন করতে হবে। আগের সমস্যাগুলো যেন না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।


বেসরকারি ব্যাবস্থাপনায়:

বেসরকারি মাধ্যমে প্রাক-নিবন্ধন সনদ এবং পাসপোর্ট প্রয়োজন। আপনি প্রাক নিবন্ধন সনদে বর্ণিত ট্র্যাকিং নম্বর দিয়ে হজ পোর্টালের পিলগ্রিম সার্চ অপশনের মাধ্যমে নিবন্ধনযোগ্য কিনা তা যাচাই করতে পারবেন।।


নিবন্ধন ২ টি পর্যায়ে হবে। প্রথমে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রাথমিক নিবন্ধন (বিস্তারিত জানতে ২০২৫ সনের প্রাথমিক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি দেখুন) এবং পরবর্তীতে হজ প্যাকেজ ঘোষণা হলে অবশিষ্ট টাকা জমা দিয়ে চূড়ান্ত নিবন্ধন করতে হবে।


বাংলাদেশে অনেকেই বেসরকারি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে হজে যান। এটি তুলনামূলকভাবে নমনীয় এবং ভিন্ন ভিন্ন প্যাকেজের সুযোগ থাকে।  সবসময় এজেন্সির সঙ্গে লিখিত চুক্তি করুন এবং জমাকৃত অর্থের রশিদ অবশ্যই সংগ্রহ করুন।


  • অনুমোদিত হজ এজেন্সি নির্বাচন করুন।
  • এজেন্সির মাধ্যমে আবেদন ফরম পূরণ করুন। 
  • নির্বাচিত প্যাকেজ অনুযায়ী টাকা জমা দিন। 
  • পাসপোর্ট, ছবি ও প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিতে হবে । লক্ষনীয় বিষয়সমুহ হলো  বৈধ মেশিন-রিডেবল (MRP) পাসপোর্ট যার মেয়াদ কমপক্ষে হজ শেষে দেশে ফেরার সময় পর্যন্ত থাকবে। পাসপোর্টটি মূল কপিসহ জমা দিতে হবে । সাম্প্রতিক তোলা ৪ কপি রঙিন ছবি (সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে, নির্ধারিত মাপ অনুযায়ী)। ছবি অবশ্যই হালনাগাদ এবং আবেদনকারীর বর্তমান চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে। 
  • এজেন্সির মাধ্যমে হজ আইডি ও নিবন্ধন সম্পন্ন করুন । 

উল্লেখিত প্রতিটি ধাপ সম্পন্ন করার মাধ্যমে অনুমোদিত এজেন্সির সহায়তায় হজের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সফলভাবে শেষ করা যায়। তাই নির্ভরযোগ্য এজেন্সি নির্বাচন করে সময়মতো প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করাই হজযাত্রার প্রস্তুতির মূল চাবিকাঠি।

 

কোটা ধরনের তালিকা (সরকারি ব্যবস্থাপনায়):

 

কোটার নামব্যাখ্যা
সাধারণ কোটাঅধিকাংশ আবেদনকারী এই কোটায় পড়ে
মুক্তিযোদ্ধা কোটাবীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত
নারী ও মাহরাম ছাড়া নারী কোটানির্ধারিত বয়সের ওপর নারী যারা মাহরাম ছাড়া হজ করতে চান (সৌদি সরকারের অনুমতি অনুযায়ী)
প্রথমবার আবেদনকারী কোটাযারা আগে কখনও হজে যাননি তাদের অগ্রাধিকার
বয়সভিত্তিক অগ্রাধিকারসাধারণত প্রবীণদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়
 

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

হজে যেতে হলে নির্ধারিত কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা আবশ্যক। এই ডকুমেন্টগুলো সঠিকভাবে জমা না দিলে নিবন্ধন বা ভিসা প্রক্রিয়ায় জটিলতা হতে পারে।

  • বৈধ পাসপোর্ট (কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ)হজ যাত্রার জন্য পাসপোর্ট একটি অপরিহার্য নথি। কমপক্ষে ৬ মাস মেয়াদ থাকা প্রয়োজন যাতে যাত্রাকালে কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় এবং সৌদি আরব প্রবেশ ও বাহিরে কোনো জটিলতা না হয়। 
  • ২ কপি পাসপোর্ট সাইজ সাদা ব্যাকগ্রাউন্ডে ছবি জমা দেওয়ার নিয়ম থাকে, যাতে ছবি স্পষ্ট ও পরিচয় যাচাই সহজ হয়।
  • জাতীয় পরিচয়পত্র (NID)প্রয়োজন ।  এটি আবেদনকারীকে সরকারিভাবে শনাক্ত করতে সাহায্য করে। 
  • কোভিড-১৯ ও মেনিনজাইটিস টিকার সনদ নিশ্চিতকরন করতে হবে । হজের সময় বিশাল ভিড় ও ঘনত্বের কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে। তাই করোনা ও মেনিনজাইটিস টিকার সনদ জমা দিয়ে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়। 
  • ব্যাংক জমার রশিদ হলো আর্থিক লেনদেনের প্রমাণ, যা আবেদন প্রক্রিয়ায় বাধ্যতামূলক।

উপরোক্ত সকল প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঠিকভাবে প্রস্তুত ও সময়মতো জমা দেওয়াই হজের সফল নিবন্ধনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যথাযথ নথিপত্র থাকা নিশ্চিত করলে আবেদন প্রক্রিয়া দ্রুত ও ঝকঝকে সম্পন্ন হয়, যা হজযাত্রাকে আরো স্বাচ্ছন্দ্যময় করে তোলে।


হজ আবেনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ 

  • প্রতারণা এড়াতে চুক্তি ও রশিদ সংরক্ষণ করুন। হজে যাওয়ার জন্য কোনো হজ এজেন্সির সঙ্গে চুক্তি করার সময় অবশ্যই লিখিত চুক্তিপত্র (Agreement) তৈরি করুন এবং তা পড়েই স্বাক্ষর করুন।প্যাকেজের ধরন ও মূল্য ,যাতায়াত, আবাসন ও খাওয়ার বিস্তারিত ,হজের তারিখ ও মেয়াদ ,জরুরি যোগাযোগ নম্বর চুক্তিতে যেন স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকে । যে কোনো অর্থ প্রদান বা কিস্তি দিলে, অবশ্যই রশিদ গ্রহণ করুন এবং তা সংরক্ষণ করুন। প্রতারণার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার এটি একটি কার্যকর উপায়।
  •  সরকারি হজ পোর্টালে নিবন্ধন নিশ্চিত করুন। বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত হজ পোর্টাল: 📍 www.hajj.gov.bd ।এখানেই আপনার হজ নিবন্ধন ও প্রোফাইল তৈরি হয়। নিবন্ধনের পর একটি হজ আইডি নম্বর দেওয়া হয়, যা আপনার সরকারি স্বীকৃতি ও ভেরিফিকেশনের প্রমাণ। অনেক প্রতারক ভুয়া নিবন্ধনের কাগজ দেখিয়ে টাকা আদায় করে। তাই নিবন্ধনের সত্যতা নিজে ওয়েবসাইটে যাচাই করুন অথবা সংশ্লিষ্ট হজ অফিসে যোগাযোগ করুন।
  • হজ ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন ।বাংলাদেশ সরকারের ধর্ম মন্ত্রণালয় কর্তৃক তৈরি “হজ ম্যানেজমেন্ট অ্যাপ” হজযাত্রীদের জন্য একটি আধুনিক ও নিরাপদ সেবা।

ইউনিক টিপস যা সবাই বলে না:


অভিজ্ঞ হজ্জযাত্রীদের সাথে কথা বলুন

অনেক সময় নিয়ম-কানুন বই পড়ে যতটা বোঝা যায় না, বাস্তব অভিজ্ঞতা শুনলে অনেক ক্লিয়ার হয়ে যায়।যখন কেউ নিজের জিবন থেকে গল্প শোনায় কীভাবে ফরম পূরণ করেছেন, কী কী অসুবিধা হয়েছিল, কেমন করে সমস্যার সমাধান করেছেন । তখন মনে হয়, এই যাত্রাটা আমাদের জন্যই।।


নিজের স্বাস্থ্য পরীক্ষা আগে করে নিন

হজ্জের সময় শারীরিক পরিশ্রম অনেক বেশি হয়। তাই আগে থেকেই ব্লাড প্রেসার, ডায়াবেটিস, হাঁটা-চলার সক্ষমতা এসব চেক করিয়ে নিন। যদি কোনো অসুস্থতা থাকে, তাহলে সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নিন এবং প্রয়োজনে ওষুধ বা অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থা নিন।।


স্মার্টফোনে হজ্জ গাইড অ্যাপ ডাউনলোড করুন

সরকার এবং ইসলামিক সংস্থাগুলো এখন হজ্জ গাইড অ্যাপ তৈরি করেছে, যেখানে মানসিক প্রস্তুতি, করণীয়, দোয়া সব দেওয়া আছে। আজকের ডিজিটাল যুগে প্রযুক্তি আমাদের অনেক কঠিন কাজকে সহজ করে দিয়েছে। হজ্জের মতো গুরুত্বপূর্ণ যাত্রাটাকেও এখন সহজতর করতে নানা সরকারি ও ইসলামিক সংস্থা বিশেষ ‘হজ্জ গাইড অ্যাপ’ তৈরি করেছে।

এই অ্যাপে শুধু নিয়ম-কানুন বা করণীয় লেখা নেই, বরং মানসিক প্রস্তুতির জন্য প্রয়োজনীয় দোয়া, পথ নির্দেশনা, হজ্জের বিভিন্ন রুক্ন সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এবং প্রার্থনার সময়সূচিও পাওয়া যায়।


পরিবারে কাউকে রেখে গেলে তাদের জন্য ব্যবস্থা করুন

হজ্জের সময় প্রায় ৪০ দিন বাইরে থাকতে হয়। বয়স্ক বাবা-মা, ছোট সন্তান থাকলে আগে থেকেই কে দেখাশোনা করবে সেটা নিশ্চিত করুন।


কীভাবে জানবেন আপনার আবেদন গৃহীত হয়েছে?

আবেদন করলে একটি Tracking ID পাওয়া যায়। এই আইডি দিয়ে আপনি অনলাইনে আবেদন স্ট্যাটাস দেখতে পারবেন:

 https://hajj.gov.bd


কিছু গুরুত্তপুর্ন পয়েন্ট (Checklist):

পাসপোর্ট প্রস্তুত , আবেদন সময় জানুন , স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান , হজ্জ গাইড অ্যাপ ডাউনলোড , কোর্সে অংশগ্রহণ , আত্মীয়স্বজনের খোঁজখবর ঠিক রেখে যান , প্রতিদিন একটু করে হজ্জের দোয়া পড়ুন।


🌺 শেষ কথা

হজ্জ মানে শুধু যাওয়ার ইচ্ছা নয়, এটি প্রস্তুতির একটি নাম। রফিক কাকার মতো আরও অনেকেই আছেন যারা বছরের পর বছর অপেক্ষা করেন। আপনি বা আপনার প্রিয়জন যদি হজ্জে যেতে চান, তবে সময় থাকতেই শুরু করে দিন প্রস্তুতি। এই লেখাটি আপনার পথচলার এক সহযাত্রী হোক।

আল্লাহ আপনাদের হজ্জ কবুল করুন। আমিন।

 


Share
Comments
কমেন্ট করতে লগইন করুন। লগইন | রেজিস্ট্রেশন

No Data Found